১৭ ফেব, ২০১০

বোটানিক্যাল গার্ডেনে অভিযান

ডেস্ক রিপোর্ট

যারা নগরে থাকেন তাদের নাগরিক বলি। আমরা ঢাকাবাসীরা এই অর্থে নাগরিক বটে। কিন্তু এখনো আমরা নাগরিক সংস্কৃতি অর্জন করতে পারি নি। তাই যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলার মত অভ্যাস আমাদের মাঝে দেখা যায়। ব্যোটানিকাল গ্যার্ডেনের মতো সংরক্ষিত, যত্ন নেয়া একটি জায়গাও বাদ পড়ে না বদভ্যাসের হাত থেকে।



ঢাকাতে ইটকাঠের আগ্রাসনে নদী, খালের মতো সবুজ ঘেরা নির্মল জায়গাও দূর্লভ। হাতে গোনা যে কিছু জায়গা আছে তাদের একটি ব্যোটানিকাল গ্যার্ডেন। এটি সময় কাটানোর কোন সবুজ ঘেরা জায়গা নয় কেবল। এখানে সংরক্ষিত আছে অজস্র  প্রজাতির উদ্ভিদ। প্রতিদিনই অনেক দর্শনাথী এখানে আসেন নিসর্গের মাঝে কিছু সময় কাটানোর জন্য। সাথে নিয়ে আসেন প্লাষ্টিক, পলিথিন কিংবা ক্যানে ভরে নানা খাবার কিংবা পানীয়। চলে যাবার সময় আর এসব অপচনশীল বস্তু ডাষ্টবিনে ফেলার কথাটা মনে থাকে না। ফেলে যান পথের ধারে। যদিও কর্তৃপক্ষ নিয়মিতই এসব আবর্জনা সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করেন বলেই মনে হয়।



বোটানিক্যাল গার্ডেনে আসা দর্শনার্থীদের আকটি সুন্দর জায়গায় ঘুরতে আসা এবং যাওয়ার সময় নষ্ট করার এ আচরণ দাগ কাটে তানজীল ভাইয়ের মনে। তিনি অনুসন্ধিৎসু চক্রের একজন শুভাকাঙ্ক্ষী । উদ্যোগ নেন পরিস্কারের। উদ্দেশ্য মূলত উপস্থিত দর্শনার্থীদের মাঝে দৃষ্টান্ত স্থাপন। চক্রের মিরপুর  শাখার সদস্যসহ মোট ১৪ জনের একটি দল মাঠে নামে ১১ ডিসেম্বর। প্রত্যেকের সাথে ছিল একটি করে ঝোলা আর বর্শা যা তারা আগের দিন তৈরি করেছিলেন। দুইটি দলে ভাগ হয়ে তারা বোটানিক্যাল গার্ডেনের একমাথা হতে আরেক মাথায় পরিস্কার অভিযান চালান। পথে ও আশেপাশে পড়ে থাকা প্লাষ্টিকজাত দ্রব্য, পলিথিন, ক্যান প্রভৃতি বর্শা দিয়ে গেথেঁ ঝোলাতে সংগ্রহ করেন তাঁরা। সব শেষে সব ময়লা ডাস্টবিনে স্তুপ করে রাখেন। অভিযান শুরু হয়েছিল সকাল ১২ টায় শেষ হয় বিকল ৪ টায়। এসময় উপস্থিত দর্শনার্থীদের মাছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কেউ বলে পাগল, প্রশ্ন করে এনজিও কিনা, অথবা ব্যবসা বা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসাইনমেন্ট কি না ইত্যাদি। আবার অনেকে প্রশংসা করেন এমন উদ্যোগের। কেউ কেউ পথে নিজেদের ফেলে দেয়া ময়লা তুলে যথাস্থানে রেখে দেন। শুরুতে কারো কারো মাঝে লোকলজ্জা থাকলেও তারা তা কাটিয়ে উঠেন।


আমরা মনে করি তানজিল ভাই এবং অচ’র মিরপুর শাখার মতো এরকম স্বতস্ফূর্ত উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসার দাবীদার।


আমাদের সমাজে শ্রমের যথাযথ মর্যাদা নেই। হাতের কাজকে আমরা মধ্যবিত্তরা সাধারণত নিচু চোখে দেখি। তাই কোন স্থানে ময়লা পরিস্কারকে আমরা নিম্নবিত্তদের কাজ বলেই ধরি। যেখানে সেখানে প্লাষ্টিক, পলিথিন, ক্যান প্রভৃতি অপচনশীল দ্রব্য ফেলে আমাদের কোন ভাবান্তর হয় না যে আমি আমর নিজের চারপাশকেই ধবংস করছি। তানজিল ভই এবং অচ মিরপুর শাখা শ্রমের প্রতি যে মর্যদা দেখিয়েছেন তাকে অভিনন্দন জানাই।


এই লেখাটি খবর-দার জানুয়ারি 2010 সংখ্যায় প্রকাশিত

2 টি মন্তব্য:

নামহীন বলেছেন...

মিরপুর শাখা এবং তানজিল ভাইকে শুভেচ্ছা জানাই।

নামহীন বলেছেন...

অন্তরের অন্তস্থল থেকে অভিনন্দন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন