১ জুন, ২০১০

টাওয়ার অব হ্যানয়



টাওয়ার অব হ্যানয়


এ লেখাটি জানুয়ারি ২০১০ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে

ব্রহ্মাস্তুপ বা টাওয়ার অব হ্যানয় একটা মজার সমস্যা। সমস্যাটা একটা পৌরাণিক কাহিনীকে নিয়ে। পুরাণ মতে, বারানসীতে একটি মন্দির আছে। ব্রহ্মা (হিন্দু ধর্মমতে সৃষ্টিকর্তা) জগত সৃষ্টি কালে প্রথম এই মন্দিরটি তৈরি করেন, এতে ধাতব পাত্রে তিনটি হীরক দণ্ড স্থাপন করেন এবং প্রথম দন্ডে ৬৪টি সোনার চাকতি আছে। চাকতিগুলো এমন ভাবে রাখা ছিল যাতে বৃহত্তম চাকতিটি ছিল সবার নীচে এবং ক্ষুদ্রতম চাকতিটি সবার উপরে ছিল।



ব্রহ্মার নির্দেশে কর্মরত পুরোহিতগণ দিবারাত্র পরিশ্রম করে চাকতিগুলোকে এক দণ্ড হতে অন্য দণ্ডে স্থানান্তরিত করতে থাকবে। যতদিন না সবগুলো স্থানান্তরিত হয়, আর চাকতিগুলো এক দণ্ড হতে অন্য দণ্ডে সরানো মাত্রই ব্রহ্মার নির্দেশে সমস্ত জগত ধবংস হয়ে যাবে। কাজটি কম সময়ের মনে হলেও পুরোহিতগণ শেষ করতে পারছেন না। কারণ ব্রহ্মা তিনটি শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন:

১. একবারে মাত্র ১ টি চাকতি স্থানান্তরিত করা যাবে।
২. কোন ছোট আকারের চাকতির উপর বড় আকারের চাকতি রাখা যাবে না।
৩. উপরের ২টি নিয়ম মেনে মাঝখানের দণ্ডটিকে সাময়িক ভাবে ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু শেষে সব চাকতিগুলো অবশ্যই ৩য় দন্ডে আনতে হবে এবং ক্রমান্বয়ে সাজাতে হবে।

এখন কথা হচ্ছে সবচেয়ে কম কত বার চাকতিগুলোকে স্থানান্তরিত করা যাবে এবং আনুমানিক কত সময় লাগবে। হিসাব করে দেখা যায় যে, যদি একটি চাকতি এক দণ্ড হতে অন্য দণ্ডে সরাতে এক সেকেন্ডও সময় লাগে তবে সবগুলো চাকতি সরাতে ৫৮৫ বিলিয়ন (১ বিলিয়ন=১০০ কোটি বছর) বৎসর সময় লাগবে। কিন্তু বিশ্বব্রহ্মান্ডের বয়স ১৪ বিলিয়ন বৎসর। তবে আশা করা যায় ৫৮৫ বিলিয়ন বৎসরে বিশ্বব্রহ্মান্ড ধবংস না হলেও মন্দিরটি অবশ্যই ধবংস হয়ে যাবে। এই সমস্যাটি সমাধানের সত্যতানির্ণয়েজন্যআপনি নিজেও বাসায় পরীক্ষা করেদেখতে পারেন, তবে এ পরীক্ষা চাকতির বদলে ছোট-বড় মুদ্রা ব্যবহার করতে পারেন। আপনি নিজেই দেখুন কত কম সময়ে আপনি এর সমাধান করতে পারেন।



তথ্যসূত্র : অঙ্ক কষে মজা
গ্রন্থনায় : মাসুদুর রহমান